1. bangladeshbulletinnews@gmail.com : bangladeshbulletinnews bangladeshbulletinnews : bangladeshbulletinnews bangladeshbulletinnews
  2. bbsnewsbd@gmail.com : bbsnewsbd bbsnewsbd : bbsnewsbd bbsnewsbd
  3. bbsnewsbd.online@gmail.com : bbsnewsbd.online bbsnewsbd.online : bbsnewsbd.online bbsnewsbd.online
  4. kabiderasorshahittoporisodekothaboli@gmail.com : kabiderasorshahittoporisodekothaboli kabiderasorshahittoporisodekothaboli : kabiderasorshahittoporisodekothaboli kabiderasorshahittoporisodekothaboli
  5. news@gmail.com : news :
সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:১৬ অপরাহ্ন

এক মুসলিম দেশ নিষিদ্ধ করল নিকাব

মীর মোহাম্মদ অনন্ত
  • আপডেটের সময় : রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ২০ টাইম ভিউ
দেশটিতে নিকাব নিষিদ্ধ হলেও হিজাব বা স্কার্ফ পরার অনুমতি থাকবে, কারণ এতে মুখ ঢাকা থাকে না। ছবি : সংগৃহীত

মধ্য এশিয়ার মুসলিমপ্রধান দেশ কিরগিজস্তানে নিকাব পরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিরগিজস্তানের জাতীয় সংসদে গৃহীত নতুন আইন অনুযায়ী, জনসমাগমস্থলে নিকাব পরলে প্রায় ২৩০ মার্কিন ডলার (১২০ টাকা ধরে বাংলাদেশি ২৭,৬০০ টাকা) জরিমানা করা হবে।

শনিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। সংবাদমাধ্যম রেডিও ফ্রি এশিয়া এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

কেন নিষিদ্ধ করা হলো নিকাব?

দেশটির আইনপ্রণেতারা জানিয়েছেন, নিরাপত্তার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদের মতে, নিকাব পরার ফলে মুখমণ্ডল সম্পূর্ণভাবে ঢাকা থাকে, যা জনসমাগমস্থলে ব্যক্তিকে শনাক্ত করা কঠিন করে তোলে। এ কারণে দেশটির সরকার চায়, জনসমক্ষে প্রত্যেকের চেহারা দেখা যাক এবং সহজে চিহ্নিত করা সম্ভব হোক।

দেশটির সংসদ স্পিকার নুরলানবেক শাকিয়েভ বলেছেন, এই আইন কিরগিজ সমাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং ধর্মীয় উগ্রবাদ প্রতিরোধে সহায়ক হবে।তবে এই নিষেধাজ্ঞা শুধু নিকাবের জন্য প্রযোজ্য। হিজাব বা মাথার স্কার্ফ পরার অনুমতি থাকছে, কারণ এটি মুখ ঢেকে রাখে না।

স্পিকার শাকিয়েভ বলেন, আমাদের মায়েরা ও বোনেরা ঐতিহ্যগতভাবেই মাথার স্কার্ফ পরেন, যা আমাদের সংস্কৃতি ও ধর্মের অংশ। তাই হিজাবের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।

বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া

এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে দেশটির বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা উঠেছে। বিরোধীদের মতে, এই সিদ্ধান্ত নারীদের পোশাক নির্বাচনের স্বাধীনতাকে খর্ব করছে এবং ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর সরকারের অযাচিত হস্তক্ষেপ।

একজন নারী অধিকারকর্মী বলেন, একটি গণতান্ত্রিক দেশে নারীদের নিজস্ব ইচ্ছা অনুযায়ী পোশাক পরার অধিকার থাকা উচিত। এই নিষেধাজ্ঞা সেই স্বাধীনতার ওপর আঘাত হেনেছে।

একজন নিকাব পরা নারী, যিনি ছয় বছর আগে বিয়ের পর তার স্বামীর অনুরোধে নিকাব পরতে শুরু করেছিলেন, তিনি বলেন, এই নিষেধাজ্ঞার কারণে আমি ঘর থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছি। বাইরে গেলে মুখ ঢাকতে মেডিকেল মাস্ক ব্যবহার করছি।

নিকাব নিষিদ্ধের আগের বিতর্ক

গত কয়েক বছর ধরে কিরগিজস্তানে নিকাব নিয়ে বিতর্ক চলছিল। ২০১৪ সালে দেশটিতে ‘আমরা কোথায় যাচ্ছি?’ নামে একটি সরকারি প্রচারণা চালানো হয়, যেখানে নিকাব ও ইসলামী পোশাককে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়।

২০২৩ সালে দেশটির সংসদ সদস্য শরাপাতকান মাজিতোভা দক্ষিণাঞ্চলীয় ওশ শহর পরিদর্শনের পর নিকাব নিষিদ্ধের নতুন প্রচারণা শুরু করেন। তিনি দাবি করেন, ‘প্রতি চারজন নারীর একজন নিকাব পরছে এবং দিন দিন এর সংখ্যা বাড়ছে।’ মাজিতোভার দাবি, নিকাবের পাশাপাশি দীর্ঘ দাড়িও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যেন নিকাব ও বড় দাড়ি নিষিদ্ধ করা হয়।

মধ্য এশিয়ার অন্যান্য দেশে ইসলামি পোশাকের অবস্থা

কিরগিজস্তানের মতো মধ্য এশিয়ার অন্যান্য দেশেও ইসলামি পোশাকের ওপর বিধিনিষেধ রয়েছে। তাজিকিস্তানে হিজাব নিষিদ্ধ এবং সরকারিভাবে প্রচার চালানো হয়, যাতে নারীরা ঐতিহ্যবাহী তাজিক পোশাক পরেন। উজবেকিস্তানে সরকারি অফিস, স্কুল এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা নিষিদ্ধ।

কাজাখস্তানে সরকারি ভবনে হিজাব নিষিদ্ধ, যদিও জনসাধারণের মধ্যে এর ওপর কোনো কড়া নিয়ন্ত্রণ নেই। তুর্কমেনিস্তানে সরকারীভাবে হিজাব নিষিদ্ধ না হলেও, কর্মস্থলে এবং অফিসে নারীদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরতে বাধ্য করা হয়।

এই দেশগুলোতে ইসলামিক পোশাক এবং দাড়ি রাখার ওপর বিভিন্ন সময়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তানে পুলিশ রাস্তায় দাড়িওয়ালা পুরুষদের আটক করে জোরপূর্বক দাড়ি কাটার ঘটনা ঘটেছে।

নিকাব নিষিদ্ধের ভবিষ্যৎ প্রভাব

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে কিরগিজস্তানে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হবে। সরকার একে নিরাপত্তার স্বার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বলে দাবি করলেও, সমালোচকরা বলছেন, এটি নারীদের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ।

এই নিষেধাজ্ঞার ফলে কিরগিজস্তানও মধ্য এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতো ইসলামী পোশাকের ওপর কঠোর নীতি গ্রহণের পথে এগোচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

উল্লেখ্য, কিরগিজস্তান একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র, যেখানে ইসলামিক সংস্কৃতির প্রভাব থাকলেও দেশটির সংবিধান ধর্ম ও রাষ্ট্রকে পৃথক রেখেছে এবং সব ধর্মের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করেছে।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর